07 Mar 2025, 07:13 am

সাংবাদিক নাদিম হত্যা কার কী যায় আসে!  — এম এ কবীর (সাংবাদিক)

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সাংবাদিক হত্যা করলে কার কী যায় আসে! কিছু বিবৃতি, মানববন্ধন, ক্ষুব্ধ মতপ্রকাশের পর আবার সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। একজন সাংবাদিক খুন মানে যে জনগণেরই কণ্ঠরোধ সেই উপলব্ধি আমাদের নেই। ইউনেসকোর প্রথম নারী মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বলেছেন, সব হত্যাই বেদনাদায়ক, কিন্তু যখন কোনো সাংবাদিকের মৃত্যু হয়, তখন জনগণ তার পক্ষে কথা বলার একটি কণ্ঠস্বর হারায়। তথ্য ও মত প্রকাশের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন বলেছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের প্রতিকার চাওয়ার মতো সরকারি কোনো ব্যবস্থা নেই। নিপীড়নের শিকার হলে তাদের প্রচলিত আইনের মাধ্যমে যেতে হবে। সংগঠনটির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেছেন,‘পাকিস্তানের মতো দেশে দুটি প্রভিন্সে জার্নালিস্ট প্রোটেকশন ল আছে, যেটা আমাদের দেশে নেই। এটা অত্যন্ত লজ্জার। এ ধরনের আইন থাকা খুবই দরকার। বরং (বাংলাদেশে) সাংবাদিক নির্যাতন করার আইন প্রচুর আছে, কিন্তু সাংবাদিককে রক্ষা করার কোনো আইন নেই।’ সাংবাদিকদের বর্তমান অবস্থা হলো হাত-পা বেঁধে কুমিরভর্তী পুকুরে ফেলে দেয়ার মতো।

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর (১৮ জুন-২৩) পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আরও ১৩ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ।

১৪ জুন রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার পথে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের কলেজ মোড়ে বাবু ও তার সহযোগীরা নাদিমের ওপর হামলা চালায়। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এই ঘটনায় নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে বাবু চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

দেশে গত সাড়ে সাত বছরে পেশাগত দায়িত্ব পালনে ৯ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। একই সময়ে শারীরিক নির্যাতন, মামলা, হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ১৪০০ সাংবাদিক। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের  বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আসকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৭ সালে ১ জন, ২০১৮ সালে ২ জন, ২০১৯ সালে ১ জন, ২০২০ সালে ১ জন, ২০২১ সালে ১ জন, ২০২২ সালে ১ জন নিহত হন। সর্বশেষ ১৫ জুন-২০২৩ এ সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম কে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৯৯৬ সালে কামরুজ্জামানকে নীলফামারীতে হত্যা করা হয়। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রæয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার এবং মেহেরুন রুনিকে তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন করা হয়। ১১ বছরের বেশি সময় পার হলেও আলোচিত এই হত্যার বিচারের দাবিতে এখনো আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করেন সাংবাদিকরা। ইতিমধ্যে এ হত্যা মামলার প্রতিবেদন দিতে গত ২২ মে পর্যন্ত ৯৭ বারের মতো সময় নিয়েছে তদন্ত সংস্থা র‌্যাব। এই ঘটনার আগে-পরেও সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। কিন্তু গত দুই দশকে বিচারে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে এমন ঘটনার নজির নেই।

২০০০ সালের ১৬ জুলাই রাতে যশোরে গুলি করে হত্যা করা হয় দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক শামছুর রহমানকে। দুইবার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেয়ার পর ২০০৫ সালের জুন মাসে অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু আসামিপক্ষ মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে আবেদন করে হাইকোর্টে। এই আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় এ মামলার বিচারকাজ প্রায় ২৩ বছর ধরে বন্ধ। ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট খুন হন যশোরের দৈনিক রানার পত্রিকার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল। ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে ২২ জনকে অভিযুক্ত করে যশোরের সংশ্লিষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে মামলাটি স্থগিত হয়ে যায়।

২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে বোমা হামলায় নিহত হন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক সাহা। প্রায় ১৩ বছর পর বিচারিক আদালতে এ হত্যা মামলার রায় আসে। মামলাটি এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। ২০০৪ সালের ২৭ জুন খুলনার শান্তিধাম এলাকায় সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন দৈনিক ‘জন্মভূমি’ পত্রিকার সম্পাদক ও খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হুমায়ুন কবির বালু। ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতম দাস হত্যা মামলাটি এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রæয়ারি সিরাজগঞ্জে শাহজাদপুর এলাকায় সংঘর্ষের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনরত আব্দুল হাকিম শিমুল শটগানের গুলিতে নিহত হন। এ মামলার বিচারকাজ এখনো শুরু হয়নি।

২০১২ সালের ১৫ জুন যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক গ্রামের কাগজের সাংবাদিক জামাল উদ্দীনকে হত্যা করা হয়। ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সাভারের ধামরাইয়ে বিজয় টেলিভিশনের ধামরাই উপজেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক জুলহাস হত্যাকান্ডের শিকার হন। ২০০১ সালে খুলনার ‘দৈনিক অনির্বাণ’ পত্রিকার সাংবাদিক এস এম নহর আলী হত্যা, ২০০২ সালে খুলনার ‘দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হারুনার রশীদ খোকন হত্যার বিচার মেলেনি আজও। ২০১৪ সালের ২১ মে খুন হন নিপুল। চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার এ সাংবাদিককে হত্যার পর তার দেহ ১০ টুকরা করা হয়। সাংবাদিক হত্যাকান্ডের কোনোটার বিচারই শুরু হয় না, কোনোটা চার্জশিটে আবদ্ধ, কোনোটা আবার তথ্য-প্রমাণের অভাবে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে আটকে যায়। গত বছরের ফেব্রæয়ারিতেও হত্যাকান্ডের শিকার হন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির। সম্প্রতি হাতিরঝিলে সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের মৃত্যুও নানা মহল থেকে তদন্তের দাবি উঠছে। বিচারহীনতার সুযোগে, সাংবাদিক হত্যার এমন মনস্তত্ত¡ একদিনেই গড়ে ওঠেনি। শুরুটা হয়েছিল, অনেক আগে। যার তালিকা দীর্ঘ। তবে ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত হত্যা করা হয়েছে ৩৪ জন সাংবাদিককে। সাগর-রুনি, শহীদ আনোয়ার, ফরহাদ খাঁ ছাড়া বাকি সবাই মফস্বলের সাংবাদিক।

সময়ের আবর্তনে এখন একজন সাংবাদিককে হত্যা করা মামুলি বিষয়। প্রকৃত সংবাদ প্রকাশের ফলে কী হতে পারে, তা জানেন সেই সাংবাদিক। তবু তিনি করেন। ঠিক যেন সংশপ্তক! তিনি জানেন, পরাজিত হতে পারেন। তবু হাল ছাড়েন না। তাই এইসব খুনীদের দ্রæত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে না পারলে, আরেকজন সাংবাদিক আক্রান্ত হবেন দ্রæত। ফলে, সাংবাদিকের মনে চূড়ান্তভাবে বাসা বাঁধবে এক ধরনের আতঙ্ক। দেশের মানুষ বঞ্চিত হবেন সঠিক এবং অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে। কোনো অপরাধের সংবাদ প্রকাশিত হবে না। চিহ্নিত হবেন না অপরাধী। অপরাধের নটরাজ নিয়ন্ত্রণ করবে সব। নিকষ কালো অন্ধকারে ছেয়ে যাবে দেশ। কোনো গণমাধ্যমেই থাকবে না অপরাধ-অন্যায়ের বর্ণনা। অবাধ তথ্যপ্রবাহ শুধু লেখা থাকবে পুস্তকের পাতায়।

আসকের নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে অস্থিরতা চলছে। সংকুচিত গণতন্ত্র আর প্রশ্নবিদ্ধ জনপ্রতিনিধিত্বের কারণে রাজনীতিতে এখন দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। আর তাদের নেতিবাচক এই দিকটির প্রতিবেদন প্রকাশ করলেই সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে।’

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেছেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দুই-একটি ছাড়া গত ৫০ বছরে দেশে কোনো সাংবাদিক হত্যার চূড়ান্ত বিচার হয়নি। এটির কারণ হতে পারে হয়তো এ বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় না। আর যারা সাংবাদিক হত্যা বা নির্যাতনে অভিযুক্ত তারা সবসরকারের আমলেই প্রভাবশালী এবং সরকারি মদদপুষ্ট লোক। তারা ক্ষমতার শক্তিতে বলীয়ান হয়েই এসব করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব ঘটনায় বিচারের জন্য এখন আর শুধু সাংবাদিক সমাজের দাবি তুললেই হবে না, যে সমাজের জন্য সাংবাদিকরা কাজ করেন সেই সমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদেরও এগিয়ে আসতে হবে।’

বøাস্টের  ট্রাস্টি ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, ‘অনেকটা নীতিবিহীন রাজনীতি চলছে। যে কেনো উপায়ে অর্থবিত্ত পদ-পদবি পেতে একটা  শ্রেণি উদগ্রীব এবং এজন্য তারা যে কোনো দুষ্কর্ম করতেও তৎপর। আর এটি যখন গণমাধ্যমের কল্যাণে প্রকাশ পায় তখনই তারা সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও অত্যাচার শুরু করেন। হত্যা করতেও দ্বিধা করেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে সরকারপক্ষ বড় কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিচার তো হয়ই না, ন্যায়বিচার তো দূরের কথা। কেন বিচার পেতে এত অপেক্ষা করতে হবে? বিচার ছাড়া কোনো কিছুতে শান্তি আসে না এই সত্যটি সংশ্লিষ্টদের উপলব্ধি করতে হবে।’

‘জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড’ বলে প্রচলিত এ শব্দবন্ধ এ ক্ষেত্রে যথার্থই প্রযোজ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনের দীর্ঘসূত্রতা, জটিল বিচারিক প্রক্রিয়া, সেইসঙ্গে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টদের থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতার অভাবসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনগুলোয় সাংবাদিকদের সুরক্ষার কথা সেভাবে বলা নেই। এ কারণে তারা দ্রæত বিচার পান না। ফলে সাংবাদিক নির্যাতনও বন্ধ হয় না।

গণমাধ্যমকর্মীরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের দায়িত্ব পালন করেন। সমাজে ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ যেখানে দুর্নীতি, টাকা পাচার, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যসহ নানা অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত, সেখানে বাস্তবিক অর্থেই দেশকে সঠিক পথে চালনায় সর্বদা সজাগ থাকেন এ গণমাধ্যমকর্মীরাই।

লেখক : এম এ কবীর, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি- ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

স্টফ রিপোর্টার :  ঝিনাইদহের মহেশপুরে কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় উপজেলার ১ হাজার ৫০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে সরকারের দেওয়া বীনামূল্যের রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

৬ মার্চ বৃহস্পতিবার মহেশপুর উপজেলা কৃষি অফিস চত্বরে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইয়াসমিন সুলতানার সভাপতিত্বে সার ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন মনিরা।

২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও তিল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার ৮৫০ জন কৃষকের মাঝে ৫ কেজি হারে মুগ বীজ, ১০ কেজি হারে ডিএপি সার ও ৫ কেজি হারে এমওপি সার এবং ২০০ কৃষকের মাঝে ১ কেজি হারে তিল বীজ, ১০ কেজি হারে ডিএপি সার ও ৫ কেজি হারে এমওপি সার বিতরণ করা হয়।

সরকারের দেওয়া উল্লেখিত বীনামূল্যের রাসায়নিক সার ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইমাম হোসেন জ্যোতি, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার বাহাউল ইসলাম ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ ফজলুল কবীর ।

ঝিনাইদহের মহেশপুরে প্রনোদনা কর্মসূচীর আওতায় ১ হাজার ৫০ কৃষকের মাঝে বীনামূল্যের সার ও বীজ বিতরণ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

আজ সকাল এগারোটায় বঙ্গভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শেখ আবদুর রশীদ।

এর আগে, গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শপথ নেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।

এ সময় প্রেস সচিব বলেন, উপদেষ্টা হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে পারেন তিনি।

উপদেষ্টা হিসেবে অধ্যাপক আবরারকে শপথবাক্য পাঠ করালেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের জন্য সম্ভাবনার বিষয়ে আশার সঞ্চার হয়েছে। পোষাক তৈরির কাজের অর্ডার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রাখবে।

ক্রেতারা আস্থা ফিরে পাওয়ার প্রেক্ষিতে এবং দেশে তাদের সোর্সিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের সাথে সাথে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সরকারি তথ্য অনুসারে, ইইউ পোশাক আমদানি (জানুয়ারী-ডিসেম্বর ২০২৪) ১.৫৩% বৃদ্ধি ($৯২.৫৬ বিলিয়ন) পেয়েছে। মোট আমদানির পরিমাণ ৮.৯৮% বৃদ্ধির ফলে গড় ইউনিট মূল্য ৬.৮৩% হ্রাস পেয়েছে।

এই নিম্নগামী মূল্য বাংলাদেশ সহ প্রধান সোর্সিং দেশগুলিকে উল্লেখ যোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে।

বিগত ক্যালেন্ডার বছরের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়কালে বাংলাদেশ থেকে ইইউতে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৯.৭৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ১৮.৮৫ বিলিয়ন ডলার।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুসারে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২০২৪ সালে ৪.৮৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানির পরিমাণ ১০.১৮% বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে উলে¬খযোগ্য পুনরুদ্ধারের প্রবণতা লক্ষ্যণীয়।

তবে, ইউনিট মূল্যে ৪.৮৪% হ্রাস পেলেও পতনশীল মূল্যের কারণে লাভ বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

মূল্য সংযোজন পোশাকের উৎপাদন, শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা মান মেনে চলা এবং উৎপাদনকারী ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা সহ রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে অবদান রেখেছে। এতে ক্রেতাদের আস্থা জোরদার হয়েছে, ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত হয়েছে এবং রপ্তানি বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।

সারা বছর ধরে ওঠানামা সত্ত্বেও, ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ধীরগতিতে শুরু হওয়ার পর, বাংলাদেশ গত অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে উল্লেখযোগ্যভাবে বছর-ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

রপ্তানি বৃদ্ধি ও এই ইতিবাচক প্রবণতা বর্তমান প্রবৃদ্ধির গতিপথকে আরও শক্তিশালী করেছে। লক্ষ্যণীয় যে, ২০২৪ সালে ২০২৩ সালের তুলনায় উন্নতি দেখা গেলেও, ২০২২ সালে অর্জিত স্তরের তুলনায় আয় এখনও কম।

বাংলাদেশের তুলনায়, চীন ২০২৪ সালে ২.৬১% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া যথাক্রমে ১২.৪১% ও ২০.৭৩% উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে ইইউতে চীনের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৬.০৭ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে ছিল ২৫.৪০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, তুরস্ক থেকে ইইউতে পোশাক আমদানি ৬.৬৪% হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২৪ সালে ১০.০৭ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ভিয়েতনাম ৪.২১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা রপ্তানিতে ৪.৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া ২০২৪ সালে ইইউ পোশাক বাজার থেকে ৩.৭৯ বিলিয়ন ডলার এবং ৪.২২ বিলিয়ন ডলার অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে, ইইউ ভারত থেকে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যা ২০২৩ সালের আয়ের তুলনায় ১.৯৭% বেশি।

প্রাক্তন পরিচালক, ব্র্যান্ড বিজিএমইএ ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, এএমডি, ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, ‘অন্যদিকে, বাংলাদেশ রপ্তানির পরিমাণ ও মূল্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে স্থিতিস্থাপকতা দেখিয়েছে। তাই, ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধির জন্য কৌশলগত পরিবর্তন জরুরি।’

তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির ধারাবাহিক মূল্যস্ফীতির মুখে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং মুনাফা মার্জিন রক্ষা করার জন্য মূল্য সংযোজন ও বাজার বৈচিত্র্য আনয়ন অপরিহার্য।

বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের সম্ভাবনার বিষয়ে আশার সঞ্চার 

   অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক বাংলাদেশ স্যাটেলাইট-১ সম্ভাব্য সৌর বিভ্রাটের কারণে ৭ মার্চ থেকে সাত দিন সম্প্রচারে সাময়িক বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

এই বিভ্রাট, সৌর উপগ্রহ হস্তক্ষেপ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়, যখন সূর্য সরাসরি স্যাটেলাইট সংকেত প্রেরণের পেছনে চলে যায় তখন এই বিভ্রাট ঘটে।

বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড বিভ্রাটের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করে আজ এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

৭ মার্চ একটি আট মিনিটের ব্যাঘাত সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে শুরু হতে পারে, এরপর ৮ মার্চ সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে ১০ মিনিট, ৯ মার্চ সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে ১২ মিনিটের ব্যাঘাত, ১০ এবং ১১ মার্চ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে ১২ মিনিট, ১২ মার্চ ৯ টা ৫০ মিনিটে এবং ১৩ মার্চ সকাল ৯টা ৫১ মিনিটে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরিচালিত টেলিভিশনের শ্রোতারা টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিস রিসিভারের পাশাপাশি সম্প্রচারে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

সৌর বিভ্রাটের কারণে বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের সম্প্রচার ব্যাহত হতে পারে ৭ মার্চ থেকে সাত দিন

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   এ বছর লালন স্মরণোৎসবে লালনের মাজার ও এর আশেপাশের এলাকায় গাঁজা ও মাদক সেবন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন।

আজ বুধবার ‘লালন স্মরণোৎসব ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান এ ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘এবারের লালন স্মরণোৎসবে লালনের মাজার ও এর আশেপাশের এলাকায় গাঁজা ও মাদক সেবন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। স্মরণোৎসবকে কেন্দ্র করে যদি কোনো ব্যক্তি সেখানে মাদক সেবন বা বিক্রি করে তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাউল ফিরোজ সাঁই, রাজ্জাক সাঁই, শফি সাঁই, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, নাগরিক প্রতিনিধি আলমাস হোসেন মামুন প্রমুখ।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

উল্লেখ্য, লালন একাডেমির উদ্যোগে প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদযাপন করা হয়ে থাকে। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকে আলোচনা সভা,  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলা। তবে এবার পবিত্র রমজান মাসের কারণে তিন দিনের পরিবর্তে অনুষ্ঠান হবে মাত্র একদিন। একই কারণে এবার আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলাও থাকছে না।

লালন একাডেমির পক্ষ থেকে তিনবেলা খাবার দেয়ার রেওয়াজ থাকলেও রমজান মাসের কারণে বাউল ভক্ত ফকিরদের ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ইফতার এবং রাতে  সেহরি খাওয়ানো হবে। পরের দিন ১৪ মার্চ দুপুরে খেলাফতধারী বাউল ফকিরদের নিজস্ব উদ্যোগে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হবে।

প্রসঙ্গত, বাউল সম্রাট লালন ফকির তাঁর জীবদ্দশায় প্রতিবছর ভক্ত ও অনুসারীদের নিয়ে দোল পূর্ণিমা তিথিতে উৎসব করতেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায় লালনের ভক্ত, অনুসারী ও বাউলরা অনুষ্ঠান উদযাপন করে আসছেন। একই সাথে প্রতিবছর অক্টোবর মাসে তিন দিনব্যাপী লালন তিরোধান দিবস উদযাপন করা হয়ে থাকে।

 

লালন উৎসবে গাঁজা ও মাদক সেবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ঢাকার নবাবগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিরকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ।

সোমবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সোনাডাংগা ভাগুলীর নাসিরউদ্দিনের ছেলে মোশারফ হোসেন মুসা (২৯), একই উপজেলার পূর্ব বাস্তার ছবর উদ্দিনের ছেলেন হাবিবুর রহমান (৩২), চরখালীয়া গ্রামের মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (৩৭), খাইলাটর গ্রামের মো. তমেজের ছেলে ইসমাইল হোসেন (২৮), চক চান্দুর এলাকার তোতা ঢালীর ছেলে মো. রবিউল ঢালী (২৭), হাকিম ঢালীর ছেলে মো. তোতা ঢালী (৬২), ফরিদপুরের টেপাখোলা এলাকার আবুল কাজীর ছেলে কামরুল কাজী (২৮), ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নবীনগরের বারাইল গ্রামের ইদনের ছেলে মো. মোমিন (৩২), চাঁনপুরের নাসির মিয়ার ছেলে রাজীব মিয়া (২৫) ও  নবাবগঞ্জের হাসনাবাদের আবতাজউদ্দিনের ছেলে  সুজন ব্যাপারী (৩৫)।

দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম জানান, সোমবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদে পুলিশ জানতে পারেন আন্তঃ জেলার একদল ডাকাত চক্রের সদস্য ডাকাতি করার জন্য দোহার-নবাবগঞ্জ থানা এলাকায় ডাকাতি করার জন্য ঘুরাফেরা করতেছে।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুজ্জামানের নির্দেশে পুলিশের একটি চৌকস টিম নবাবগঞ্জে চৌরঙ্গী মোড়ে সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টায় চেকপোস্ট করাকালে একটি হলুদ নীল রংয়ের ট্রাকে সিগন্যাল দিলে ট্রাকটি থেকে ডাকাতরা পালানোর চেষ্টা করে।

এসময় পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায় প্রথমে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে আরো ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক, ১টি ত্রিপল, ভল্ট কাটার, চাপাতি, প্লাষ্টিকের পাইপ, শাবল, কাঁচি, বাধাঁর রশি, ৩টি খাসি ও ১টি গরু উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাবাদ আসামীরা জানিয়েছে তারা ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা, মানিকগঞ্জ জেলা, ফরিদপুর জেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে থাকে।

দোহার সার্কেলের সিনিয়র পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত করা হচ্ছে।

ঢাকার নবাবগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ ডাকাত দলের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :   ঝিনাইদহের শৈলকূপায় টিসিবির ১০০ প্যাকেট পণ্য ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জুলিয়াস আহমেদ নামে যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) উপজেলার ৫ নম্বর কাঁচেরকোল ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিক্রির সময় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে কাঁচেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে টিসিবির পণ্য বিতরণের প্রস্তুতি শুরু করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলার। এসময় ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জুলিয়াস আহমেদ লোকজন নিয়ে ১০০টি কার্ডের টিসিবির পণ্য নিয়ে যান। ডিলারের লোকজন বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা ভয়ভীতি দেখান।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি প্রশাসক মো. শরীফ উদ্দীন জানান, সকালে টিসিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলার পণ্য বিক্রির জন্য যান। এসময় ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জুলিয়াসের নেতৃত্বে কয়েকজন লোক কার্ড ছাড়াই১০০ প্যাকেটি নিয়ে যান। পরে ইউএনও স্নিগ্ধা দাসকে ঘটনাটি অবহিত করেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা।

ডিলার মেসার্স ছাবির এন্টারপ্রাইজের কর্মরত ব্যক্তি জানায়, হুট করে জুলিয়াসের লোকজন ১০০ প্যাকেট পণ্য নিয়ে যান। পরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও প্রশাসনকে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপরে জুলিয়াস ১০০টি পণ্যের দাম পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এখনো টাকা পায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা জুলিয়াস বলেন, ঘটনাস্থলে সিসি টিভি ক্যামেরা আছে। আপনারা ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করুন। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি। কে বা কারা টিসিবির পণ্য নিয়ে গেছে আমি কিছুই জানি না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানোর জন্য এরকম অভিযোগ তুলেছে।

ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনা শোনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। জুলিয়াস মালগুলো ফেরত দিতে চেয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত ফেরত দিয়েছেন কিনা জানি না। ব্যক্তির কোনো ভুলের দায় দল নেবে না।

বিষয়টি নিয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিগ্ধা দাস বলেন, মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রশাসনকে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ঝিনাইদহের শৈলকূপায় টিসিবির ১০০ প্যাকেট পণ্য ছিনিয়ে নিলেন যুবদল নেতা

ডোনাল্ড ট্রাম্পনরেন্দ্র মোদী

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক :  মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আগামী ২ এপ্রিল থেকে ভারতের ক্ষেত্রেও চালু হবে পারস্পরিক শুল্ক নীতি। আজ বুধবার ভারতীয় সময় সকালে মার্কিন কংগ্রেসের ভাষণে ট্রাম্প একথা বলেন।

ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাজেশ আগরওয়ালকে তড়িঘড়ি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছিল  প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন নরম করানোর জন্য এবং বোঝানোর জন্য যে ভারত যখন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিতে আগ্রহী। ফলে একতরফাভাবে পারস্পরিক শুল্কনীতি রূপায়নের আওতা থেকে ভারতকে বাইরে রাখা হোক। কিন্তু গোয়েলকে সেই সুযোগ দিল না ট্রাম্প প্রশাসন।

শুল্ক প্রসঙ্গে অন্য কয়েকটি দেশের নামের পাশাপাশি ট্রাম্প ভারতের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত আমাদের কোনো কোনো পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপায়। এটা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ন্যায্য নয়।’

দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই ভারতের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ট্রাম্প সোচ্চার ছিলেন। একসময় ভারতকে তিনি ‘ট্যারিফ কিং’ বলেও উল্লেখ করেছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়েও ট্রাম্প শুল্কনীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করেছিলেন। মোদিকে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি অবশ্যই চান, কিন্তু তা কখনো শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে নয়।

আজ বুধবার সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভারতকেও পারস্পরিক শুল্কনীতির আওতায় আনার কথা তিনি জানিয়ে দিলেন ট্রাম্প।

মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ট্রাম্প বলেন, বহুদিন ধরে বিভিন্ন দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়ে এসেছে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের পালা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ব্রাজিল, ভারত, মেক্সিকো, কানাডাসহ অন্য দেশ যত শুল্ক আরোপ করবে, যুক্তরাষ্ট্রও তাদের রপ্তানির ওপর ঠিক ততটাই শুল্ক আরোপ করবে।

ট্রাম্প তাঁর ভাষণে বলেন, এই পারস্পরিক শুল্কনীতি ২ এপ্রিল থেকে চালু হবে। এটাই ট্রাম্পের ‘টিট ফর ট্যাট’ নীতি, যা তিনি নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই বলে আসছেন।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। পীযূষ গোয়ালের দূতিয়ালি নিয়েও দিল্লি এখনো নীরব রয়েছে।

আগামী ২ এপ্রিল থেকে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ৭ই মার্চ, ২০২৫ ইং
  • ২৩শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বসন্তকাল)
  • ৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, সকাল ৭:১৩

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31      
     12
       
15161718192021
293031    
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018